কি পেলাম

এক

গত বিশ বছরের ইতিহাস ঘাটুন। বঙ্গ নাগরিক হিসেবে কি পেয়েছেন আর মুসলিম হিসেবে কি পেয়েছেন? আর ৯৫ শতাংশের মুসলিম বঙ্গ ভূমিতে আমার ইসলাম কি পেলো?

সময়ের সাথে সাথে বঙ্গ নাগরিক হিসেবে একটি ডিজিটাল বাংলাদেশ পেয়েছি। LED/LCD টিভি, কম্পিউটার, ইন্টারনেট, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, হাতে হাতে স্মার্ট ফোন, তথ্য প্রযুক্তির উন্নতি ব্যস।

তবে মুসলিম হিসেবে রাসূল সা. এর প্রেমে অন্ধ কিছু নিরপরাধ পাগল ফাসির কাষ্ঠে ঝুললো। আরও কিছু নিরপরাধ পাগল জেলের ঘানী টানছে। কিছু নিরপরাধ পাগল আজও পালিয়ে বেড়াচ্ছে। আর এরই মাঝে ইসলাম শাসকগোষ্ঠীদের থেকে এক নতুন উক্তি পেলাম যে- “ধর্ম যার যার উৎস সবার”

দুই

নেতাদের নৈতিকতা কতটুকু? তারা কতটা যোগ্য আমাদের জন্য? মুসলিমদের জন্য? তাদের হাতে কতটা নিরাপদ আমাদের ইসলাম?

এদেশের নেতার নৈতিকতা অনেক বেশি, রীতিমত ঈর্ষনীয় পর্যায়ে তাদের নৈতিক অবস্থা। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাদের আসন নির্ধারিত থাকে একসারি সুন্দরী রমনীদের মাঝে, মধ্যমনীর স্থানে। আর সেখানেও মাঝে মাঝে তাদের মাথায় টুপিরও দেখা মেলে। দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে মদিনার সনদ কে তারা সামনে রেখে পরিচালনা কার্য সম্পাদনা করেন আর বলেন মদিনার সনদে ধর্ম নিরপেক্ষতার কথা রাসূল সা. নিজেই বলেছেন।
এসকল নেতাদের হাতে আমাদের সুশীত সমাজ নিরাপদ বটে, তবে ধর্মপ্রাণ মুসলমান আর আমার ইসলাম কতটা নিরাপদ তা আপনাদের বিবেচনায় রেখে দিলাম।

তিন

কাওমী সন্তান হয়ে বঙ্গ ভূমিতে কি পেলাম?

গতকালও যারা বলতো আমাদের সন্তানদের কে কাওমী মাদ্রাসার কবল থেকে বাচাতে হবে। কাওমী সমাজ সন্ত্রাসবাদী। আজানের আওয়াজে শব্দ দূষণ হয়। যারা বলতো ধর্ম যার যার উৎসব সবার। মিডিয়াগুলা নিজেদের TRP বাড়ানোর জন্য টক-শো’র আয়োজন করে মঞ্চে বসা অতিথিদের মুখ থেকে বের করতো-“কাওমী সন্তানেরা কিসের অধিকার চায়? ওরা তো আমাদের জাকাত ফেৎরা খেয়ে বড় হচ্ছে। যারা বলতো চামড়া কালেকশনের টাকায় যাদের জীবন চলে তাদের আবার কিসের অধিকার?” তারা কাওমী সন্তানদের কে দেখলেই জংগী বলে ঠাট্টা বিদ্রুপ করতো। জনসম্মুখে দাড় করিয়ে তল্লাশি করে হেনস্থা করতো।

আজ তারাই আবার নিজ নিজ স্বার্থ বাচাতে বলছে- আমাদের সন্তানদের কে মানুষ করতে হলে, উন্নত চরিত্রের উচ্চ শেখড়ে পৌছাতে হলে কাওমী শিক্ষার বিকল্প নেই। কাওমী সমাজ মানুষ তৈরির কারিগর। একজন কাওমী সন্তান কখনো রাস্তা নির্মানের কাজে রডের বদলে বাশ দিবে না। আজ তারাই বলে ক্ষমতায় আসলে পাচ ওয়াক্ত নামায বাধ্যতা মুলক করা হবে। আজ তারাই বলে- ওরা ওদের অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকতে চায়। এদেশে আমাদের মত ওদেরও রয়েছে অধিকার। এখন সরকারী খরচে প্রত্যেক জেলায় মসজিদ মাদ্রাসা নির্মাণ করা হবে। মদিনার সনদে দেশ পরিচালনা করা হবে…. আর এখনও সেই হলুদ মিডিয়া পূর্বের ন্যায় নিজেদের TRP বাড়ানোর জন্য নব উদ্যামে প্রচার করে চলেছে তাদের এই পরিবর্তিত মহান বাণী।

আমরা আমাদের প্রাপ্য পেয়েছি, অধিকার পেয়েছি। আমাদের শিক্ষার স্বীকৃতি পেয়েছি। আমরা বাঙালী সন্তান, এগুলা আমাদের প্রাপ্য ছিলো। এ সম্মান ভূষিত করে সে আমাদের উপর দয়া করেনি বরং হুকুকুল ই’বাদ (মানুষের হক্ব) আদায় করেছেন।

চার

৫৬ হাজার বর্গ মাইলের ৯৫ শতাংশের মুসলিম বঙ্গ ভূমিতে রাসূল সা. এর সম্মান কতটুকু রক্ষা হচ্ছে?

৯৫ শতাংশের মুসলিম দেশের প্রধানমন্ত্রীর কুটুক্তিকারীর সামান্য সময়ের ব্যবধানে হাজতবাস হয়, অথচ নাস্তিক-মুরতাদেরা প্রকাশ্যে রাসূল সা. এর উন্নত চরিত্রে কালিমা লেপন করে যাচ্ছে তাই বকে গেলো এবং মহান রাব্বে কারীম আল্লাহ কে শুকর বলে আখ্যায়িত করলো (নাউজুবিল্লাহ্‌)। কিন্তু রাষ্ট্র তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কোন ব্যবস্থা তো দূরে থাক, মদীনা সনদের দোহাই দিয়ে যারা দেশ পরিচালনা করছে তাদেরও এতে সামান্য পরিমাণ মাথা ব্যথা হলো না।

পাচ

হে বঙ্গ মুসলিম!
ভাবো, যদি রোজ হাসরে রাসূল সা. তোমার সামনে প্রশ্ন রাখেন-
আমার অপমানে কি কাদেনি তোমার মন?
প্রতিবাদ তো করোনি ক্ষমতা, সম্পদ, পরিবার আর প্রাণের ভয়ে। তবে আজ কেন দাড়িয়ে আমার পানে?

ভাবুন, ঐদিন, একমাত্র বিপদের উদ্ধারকারীর এই প্রশ্নে আপনার উত্তর কি হবে..

Leave a comment